প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সংবিধান নিয়ে ফুটবল খেলার পথ চিরতরে বন্ধ করে দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
বাংলাদেশের সংবিধান গৃহীত হওয়ার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে শুক্রবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেস স্পোর্টস লাউঞ্জে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এমন কথা বলেন তিনি।
আনিসুল হক বলেন, এমন কোনো বিধান নেই, যা বঙ্গবন্ধুর সংবিধানে নেই। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে সংবিধানের রূপকেই মূলত হত্যা চেষ্টা করা হয়েছে। সংবিধানের চরিত্র পাল্টে বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে রূপ দেওয়া হয়েছিল। তবে সেখান থেকে ফিরিয়ে এনে দেশের উন্নয়ন এবং পূর্ণাঙ্গ একটি সুন্দর সংবিধান যে আমরা পেয়েছি, এটাই প্রধানমন্ত্রীর সব চেয়ে বড় উপহার।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান কেবল দেশের সর্বোচ্চ আইনই নয়, সংবিধানে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের মূল চরিত্র বর্ণিত রয়েছে। এতে বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমারেখা বিধৃত আছে। দেশটি হবে প্রজাতান্ত্রিক, গণতন্ত্র হবে এ দেশের প্রশাসনিক ভিত্তি, জনগণ হবে সব ক্ষমতার উৎস এবং বিচার বিভাগ হবে স্বাধীন। ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে আমাদের মুক্তি-সংগ্রামের ইতিহাস ও সংবিধানের চেতনা ধারণের জন্য জাতীয় সংবিধান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সভাপতির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, আমাদের সংবিধান প্রণেতারা একটি উজ্জ্বল বাংলাদেশের জন্য দলিল তৈরি করেছেন। প্রতিটি জাতির আত্মপরিচয়ের স্মারক সংবিধান। এখানে রয়েছে ন্যায়বিচার আর বিচারের প্রতি আনুগত্য। আমাদের গণচেতনার প্রতিফলন রয়েছে এ সংবিধানে। সংবিধানের বিশেষ অংশকে প্রত্যেক শ্রেণির পাঠ্যসূচি করা উচিত বলে আমি মনে করি।
আয়োজনে সংবিধানের সুবর্ণজয়ন্তীতে ১৯৭২ সালের হাতে লেখা সংবিধানের স্মারক গ্রন্থ প্রকাশ করা হয় এবং সংশ্লিষ্টদের তা উপহার দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এবং বক্তব্য দেন, প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিশেষ অতিথি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, সুপ্রিম কোর্ট আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, অন্যতম সংবিধান প্রণেতা ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সভাপতি ও সিনিয়র আইনজীবী ড. কামাল হোসেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি ফজলুল করিম, সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক, সাবেক প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হক, সাবেক প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, রেল মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন ও বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহাবুব আলী এমপি প্রমুখ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, সংবিধানের খসড়া প্রণয়ন কমিটির ৩৪ জনের পরিবারের সদস্যরা, সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে সম্মাননা নিতে জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. শহীদুজ্জামান সরকার, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি সিমিন হোসেন রিমি, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ, বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতিগণ, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক ও বর্তমান বিচারপতিগণ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের আইন কর্মকর্তাসহ আমন্ত্রিত অতিথি, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং গণমাধ্যম কর্মীরা।